★★★
ইতিমধ্যে আমরা জেনে গিয়েছি জামদানীর যত্নে জামদানী ড্রাই ক্লিনিং এ দেয়া যায় না।কাটা ওয়াশ করতে হয়।কিন্তু অনেকেরই কাটা ওয়াশ নিয়ে অনেক প্রশ্ন। আমরা কাটা ওয়াশ টা কি সেটা বুঝিনা।আজকে আমরা জানবো জামদানীর কাটা ওয়াশ নিয়ে।
***
তাঁতীরা যে পদ্ধতিতে পুরনো,ন্যাতানো,মিসপ্ল্যাসড হয়ে যাওয়া সুতা,ফাংগাস পড়ে যাওয়া জামদানী শাড়ি ক্লিন করে নতুনের মতো কড়কড়া করে দেয় সেটাকে কাটা ওয়াশ বলে।
কাটা ওয়াশ এর জন্য তাঁতীরা প্রথমে খোলা জায়গায় শাড়ির দৈর্ঘ অনুযায়ী ৪ কোনায় ৪ টা খুটি ঘেরে।তারপর শাড়ির ৪ কোনা ওই ৪ টা খুটিতে টানটান করে বাধা হয়।শাড়ি টানটান না হলে কাটা ওয়াশ এর পর সুতা কুচকে শাড়ি ভাজ পড়ে যায়।তাই বাধাটা গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর ওই শাড়িটা কড়া রৌদে পানি দিয়ে ধুয়া হয়।ধুয়ে ওই অবস্থায় রৌদে শুকিয়ে কড়কড়া করে শুকিয়ে নেয়া হয়। শুকানো কাপড়ের চারদিকে পাতলা চিকন খাপের মতো লম্বা বেত দিয়ে শাড়িটিকে আরো টানটান করা হয়।যেনো কোথাও ভাজ না পরে।
পরের স্টেজে ভাতের মাড় কে ব্লেন্ড করে পাতলা চিকন কাপড়ে ওই ব্লেন্ড করা মাড় ডেলে ছাকতে দেয়া হয়।ছাকার পর যে পাতলা মাড়টা থাকে তাঁতীরা তা হাতে নিয়ে দুই হাতে ঘসে ঘসে শাড়িতে লাগায়।প্রতিটি সুতার ভিতরে ওই মাড় ঢুকে এবং হাত দিয়ে সুতার বুনন ঠিক করে।এভাবে পুরা শাড়িতে মাড় লাগিয়ে কড়া রৌদে আবার শুকানো হয়।শুকিয়ে গেলে শাড়িটি আবার জামদানীর ভাজ দিলেই হয়ে যায় নতুন চকচকা জামদানী শাড়ি!?
***
কাটা ওয়াশ এর জন্য যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ তা হলো –
১. শাড়ি এক্সপার্ট তাঁতীর হাত দিয়েই করাতে হবে।
২. অতিরিক্ত পুরনো সুতি জামদানী যা হাতে একটু টান লাগলেই ফেসে যাবে এমন শাড়ি দেয়া যাবেনা।তাহলে খুটিতে বাধার সময়ই ছিড়ে যাবে।
৩. কড়া রৌদ ছাড়া কাটা ওয়াশ পসিবল না।
৪.কাটা ওয়াশ দেয়ার আগে শাড়ির ডিফেক্টগুলো তাঁতীকে দেখিয়ে দিতে হবে।যেনো সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে।
বিঃদ্রঃ শাড়ির কোনো অংশ ছিড়ে গেলে / কেটে গেলে কতটুকু নষ্ট হয়েছে তার উপর ডিপেন্ড করবে কাটা ওয়াশে ঠিক হবে নাকি রিপু করতে হবে।ওটা নিয়ে আলাদা একটা পোস্ট দিবো ইনশাআল্লাহ।
***
পরিশেষে বলবো কাটা ওয়াশে যে পরিমাণ পরিশ্রম করে তাঁতীরা সেই তুলনায় পারিশ্রমিক কিছুই নয়।একটা কাটা ওয়াশ এ ২৫০-৩০০ টাকা খরচ রাখা হয়!
ধন্যবাদ।